বাংলাদেশ প্রতিনিয়ত ডেস্কঃ টানা তিন দিনের ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে ফেনী-পরশুরাম আঞ্চলিক সড়ক পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে পরশুরামের সঙ্গে জেলা সদরের সরাসরি যোগাযোগ সম্ভব হচ্ছে না। বাধ্য হয়ে যাত্রীরা ছাগলনাইয়া-খন্ডলহাই সড়ক ব্যবহার করছেন। তবে, ওই সড়কে যানবাহন কম এবং ভাড়া বেশি হওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
Google news
সিএনজি অটোরিকশার চালক আবদুল ওয়াদুদ বলেছেন, “ফেনী থেকে মুন্সিরহাট পর্যন্ত যাওয়া গেলেও এর পর পুরো সড়ক পানির নিচে। তাই, খন্ডলহাই সড়ক ব্যবহার করছি।”
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা শ্যামল রায় বলেছেন, “পরশুরাম যেতে দ্বিগুণ ভাড়া দিতে হচ্ছে। যাতায়াত কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে।”
স্থানীয় বাসিন্দা রাজু বলেছেন, গতকাল রাত দেড়টার দিকে হঠাৎ করে বাড়িতে পানি উঠে যায়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঘরের ভেতর হাঁটুসমান পানি হয়। কোনোরকমে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে স্থানীয় আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছি।
এদিকে, ফেনীতে বন্যা পরিস্থিতি আরো অবনতির দিকে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ফেনী কার্যালয়ের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আবুল কাশেম জানিয়েছেন, মুহুরী নদীর পানি এখন বিপৎসীমার ৭৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতকালের চেয়ে পানিপ্রবাহ কিছুটা কমলেও বাঁধ ভেঙে পরশুরাম ও ফুলগাজীর অনেক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
ফুলগাজী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ফারিহা ইসলাম জানিয়েছেন, উপজেলার অন্তত সাতটি স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙেছে। এতে ১৪টি গ্রাম পানির নিচে চলে গেছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে দেড় শতাধিক মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের জন্য শুকনো খাবার ও রান্না করা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরশুরাম ও ফুলগাজীতে ১৩১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বাঁধের ভাঙন ঠেকাতে আগেভাগে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়ায় প্রতিবছরের মতো এবারও সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।